শায়েখ গজালি (রহ:) এক ঘটনা বর্ণনা করেন। ঘটনাটি ছিল এরকম-
এক বাদশার একটি বিশাল বাগান ছিল। বাগানটি ছিল বিভিন্ন স্তর বিশিষ্ট। বাদশাহ তার একজন সেবককে ডাকলেন। একটি ঝুড়ি তার হাতে দিয়ে বললেন, আমার এই বাগানে যাও এবং ঝুড়ি বোঝাই করে নানা রকম ফলমুল নিয়ে আস। ঝুঁড়ি ভরে ফল আনতে পারলে আমি তোমাকে পুরস্কৃত করব। কিন্তু শর্ত হল, বাগানের যে অংশ তুমি যাবে হবে সেখানে তুমি দ্বিতীয়বার যেতে পারবে না। লোকটি মনে মনে ভাবল এটা তো কোন কঠিন কাজ নয়। সে এক দরজা দিয়ে বাগানে প্রবেশ করল। দেখল, গাছে গাছে ফল পেকে আছে। নানা জাতের সুন্দর সুন্দর ফল। কিন্তু এগুলো তার পছন্দ হল না। সে বাগানের সামনের অংশে গেল। এখানকার ফলগুলো তার কিছুটা পছন্দ হল। কিন্তু পরক্ষনেই সে ভাবল আচ্ছা সামনের অংশে হয়ত আরো উন্নত ফল পাব, সেখান থেকেই ফল নিয়ে ঝুঁড়ি ভরব। পরের অংশে এসে অনেক উন্নত মানের ফল পেল। এখানে এসে তার মনে হল এখান থেকে কিছু ফল ছিড়ে নেই। কিন্তু পরক্ষণে ভাবতে লাগলো যে সবচেয়ে ভাল ফলই ঝুড়িতে নিবে। তাই সে সামনে এগিয়ে বাগানের সর্বশেষ অংশে প্রবেশ করল। সে এখানে এসে দেখল ফলের কোন চিহ্নই নেই। অতএব সে আফসোস করতে লাগল আর বলতে লাগল, হায় আমি যদি বাগানে ঢুকেই ফল সংগ্রহ করতাম তাহলে আমার ঝুড়ি এখন খালি থাকত না। আমি এখন বাদশাকে কি করে মুখ দেখাব।
ঘটনা বর্ণনা করার পর শায়েখ গজালি (রহ:) বলেন, বন্ধুগণ, বাদশাহ হলেন আল্লাহ, আর বাগানে প্রবেশকারি লোকটি হল তুমি। আর ঝুড়ি হল তোমার আমলনামা। আর বাগান তোমার জীবন। বাগানের বিভিন্ন অংশ তোমার জীবনের বিভিন্ন ধাপ। আর তোমাকে নেক কাজের ফল ছিড়তে বলা হয়েছে, কিন্তু তুমি প্রতিদিনই ভাব, আগামী কাল থেকে ফল ছেড়া আরম্ভ করব। আগামী দিন আগামী দিন করতে করতে তোমার জীবনে আর আগামী দিন আসবে না। এভাবেই তুমি রিক্ত হস্তে আল্লাহর সামনে হাজির হবে।

Anonymous

No comments:

Post a Comment

Instagram