অনেক দিন আগের কথা।
লি-লি নামে এক চায়নীজ মেয়ে বিয়ের পর শ্বশুরবাড়ি গেল। কিছুদিনের মধ্যে সে বুঝতে পারল তার শাশুড়ি একজন বদ মেজাজী মহিলা। লি-লির আচার ব্যবহারে তিনি যেমন বিরক্ত হন, শাশুড়ির ব্যবহারে লি-লিও অতিষ্ঠ হয়। দিন যায়। লি-লি আর তার শাশুড়ির ঝগড়া চলতে থাকে। স্বামী বেচারার অবস্থা খারাপ, বাড়ি এলেই মা অভিযোগ করেন বউ এর বিরুদ্ধে আর রাতে বউ এর অভিযোগ শাশুড়ির বিরুদ্ধে।
লি-লি চিন্তা করল সে কোন ভাবেই শাশুড়ির সংগে থাকবে না। অন্যদিকে স্বামী বৃদ্ধা মা কে ছেড়ে আলাদাভাবে থাকবে না। নিজের সংসারের সুখের কথা ভেবে অবশেষে লি-লি একটি কঠিন সিদ্ধান্ত নিল। সে শরণাপন্ন হলো তার এক চাচা মিস্টার হু-ওয়াং এর যে কিনা হার্বাল চিকিৎসা বিদ্যায় অভিজ্ঞ।
লি-লি চাচাকে সব খুলে বলল। সে বলল চাচা আমাকে এমন হারবাল ঔষধ দিন যা দিয়ে আমি আমার শাশুড়িকে মেরে ফেলতে পারি। কারণ এই মহিলার সাথে আমার থাকা সম্ভব নয়।
মিস্টার হু-ওয়াং লি-লি কে বললেন আমি তোমাকে কিছু ধীর গতির হারবাল বিষ দিব, যা তুমি প্রতিদিন খাবারের সাথে মিশিয়ে তোমার শাশুড়িকে খাওয়াবে। এক বছর লাগবে তোমার কাজ হতে। তবে কোন সন্দেহ যেন না হয় সেজন্য উনার সাথে ভাল ব্যাবহার করবে। ভাল ভাল খাবার তৈরি করে এই হারবাল মিশিয়ে খাওয়াবে। একেকদিন একেক খাবার দিবে যেমন কোন দিন স্যুপ, কোন দিন কেক, কোন দিন নুডুলস এই রকম। প্রতিদিন খাওয়াবে। মাত্র এক বছর, তারপর তোমার মুক্তি। সুখের সংসার!!।
দিন যেতে থাকে। প্রতিদিন লি-লি নতুন নতুন খাবার বানিয়ে শাশুড়িকে খাওয়ায়। তার ষড়যন্ত্র যেন ধরা না পড়ে সে জন্য অত্যন্ত ভাল ব্যবহার করে। শাশুড়ি একটু আধটু খারাপ ব্যবহার করলেও সে শান্ত থাকে। শাশুড়িও ভাল ব্যবহার পেয়ে কেমন যেন বদলে যেতে থাকে। তিনিও এই মেয়েটির প্রতি ভাল ব্যবহার করতে থাকে। অন্যের কাছে গল্প করা শুরু করা তার মত ভাল ছেলের বউ কারো হয় না। ঠিক যেন নিজের মেয়ের মত।
ছয়মাস পর পুরো বাসার পরিবেশ বদলে যায়। স্বামী আনন্দ চিত্তে বাসায় ফিরে। মা যখন বউ এর গুণগান করে তার মনটি ভরে যায়। স্ত্রীর প্রতি তার ভালবাসা বেড়ে যায়। স্ত্রীর কাছ থেকে মায়ের প্রশংসা শুনে তার হৃদয় প্রশান্তিতে ভরে ওঠে।
বছর পুরো হতে চলল। এবার লি-লি বিষণ্ণ মনে চাচার সাথে দেখা করে। চাচাকে সে বলে তার শাশুড়ি এখন অনেক ভাল হয়ে গেছে। তাকে নিজের মেয়ের মতই দেখে। এখন আর তাদের ঝগড়া হয় না। অন্যদের কাছে তার প্রশংসা করে। স্বামী তাকে আগের চেয়ে অনেক বেশী ভালবাসে। সুতরাং সে চাচাকে অনুরোধ করে এমন কোন ঔষধ দিতে যাতে এক বছরের বিষক্রিয়া নষ্ট হয়ে যায়। সে চায় না তার শাশুড়ি মারা যাক!! বরং শাশুড়িকে নিয়েই তার সংসার এখন অনেক সুখের, সে সেটা থেকে বঞ্চিত হতে চায় না।
চাচা এবার হাসেন। লি-লি কে বলেন আমি তোমার শাশুড়িকে কোন বিষ দেইনি বরং যা দিয়েছি তা উনার জন্য প্রয়োজনীয় ভিটামিন। উনি এর প্রভাবে মারা যাবেন না। আর বিষ যেটা ছিল সেটা তোমার মনে। সেটা তুমি তোমার ব্যবহার দিয়ে ক্ষয় করে দিয়েছ। লি-লি প্রথমবার শাশুড়িকে খুন করার পরিকল্পনা করে যে রকম খুশী হয়ে বাসায় ফিরেছিল এবার তারচেয়ে অনেক বেশী খুশী হয়ে বাসায় ফিরে যায় যখন জানল শাশুড়িকে খুন করার এক বছরের চেষ্টা ব্যর্থ হয়েছে!

Anonymous

No comments:

Post a Comment

Instagram